ছয় বছরেও শেষ হয়নি রাউজান হাইওয়ে থানা ভবন নির্মাণের কাজ। ভবনের চারপাশ ঝোপজঙ্গলে ভরপুর, দেখলেই মনে হবে ভূতের বাড়ি। কবে শেষ হবে হাইওয়ে থানা ভবন নির্মাণের কাজ। ভাড়া ভবন থেকে কীভাবে মিলবে মুক্তি। জানা যায়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর রাউজান হাইওয়ে থানা ভবন নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম- রাঙামাটি সড়কের পাশে বড়পোল এক একর জমি অধিগ্রহণ করে। জমি অধিগ্রহণের পর জমির চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই অধিদপ্তরের প্রকল্পের মাধ্যমে থানা ভবন নির্মাণে টেন্ডার আহবান করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাসেম কনস্ট্রাকশন ও মেসার্স ইকবাল এণ্ড ব্রাদার্স এ কাজের দায়িত্ব পায়। প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইতলা থানা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে তিন ও চার তলার কাজ শুরু করে আরও একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দুই তলা ভবনের কাজ শেষ হলেও তিন ও চার ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি ৬ বছরেও। হাইওয়ে পুলিশের সূত্রে জানা যায়,প্রায় দুই যুগ আগে হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে রাউজান পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক গহিরা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে কার্যক্রম শুরু করে।কয়েক বছর পর দ্বিতীয় বারের মতো অস্থায়ী থানা করেন রাউজান পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডস্থ গহিরা বড়পুল এলাকায় কুণ্ডেশ্বরী মালিকাধীন দ্বিতল ভাড়া ভবনে রাউজান হাইওয়ে থানা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।সেখানে ১৭ বছর ভাড়ায় থাকার পর রাঙামাটি মহাসড়ক প্রসস্থকরণের জন্য ভবনের একাংশ ভাঙাতে পড়ে। তাই সেখান থেকে রাউজানের গহিরা কলেজ মার্কেটের আরও একটি ভাড়া ভবন নিয়ে হাইওয়ে থানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ৬ বছর ধরে সেখান থেকে পরিচালিত হচ্ছে থানা কার্যক্রম। কবে ভাড়া ভবন থেকে মুক্তি মিলবে হাইওয়ে পুলিশের।রাউজান হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক ও উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, রাউজান হাইওয়ে থানার পুলিশের ২২জন সদস্য চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের হাটহাজারী থেকে রাউজান রাবার বাগান, হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ থেকে নাজির হাট পর্যন্ত চট্টগ্রাম নাজির হাট সড়কের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বর্তমান ভাড়া থানা ভবনের ভাড়া ২৪ হাজার ৫০০ টাকা। পুলিশ জানায়, পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিং না থাকা, দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো রাখার অসুবিধা, পুলিশের আবাসন সংকট, পানিসহ অন্যান্য অসুবিধার মধ্য দিয়ে থানা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। প্রায় দুই যুগ ধরে ভাড়া ভবনে হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০১৮ সালে রাউজান হাইওয়ে থানা পুলিশের আবাসন সংকট, পয়ঃনিষ্কাশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকট লাঘবে স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর থানা ভবন নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু করেছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইকবাল এণ্ড ব্রাদার্স। পরে তিন ও চার তলার কাজ শুরু করে আরও একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ভবন নির্মান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকা পরিশোধ না করায় তারা অসম্পন্ন অবস্থায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির রায়হান বলেন, ‘পুলিশের রাজস্ব বাজেটের প্রজেক্টগুলোতে ফান্ড নেই। ফান্ড না থাকার কারণে ঠিকাদারও কিছু পাওনা আছে। প্রায় ৩০-৪০ লাখ টাকা পাবে। এক তলা দুই তলায় একজন ঠিকাদার, তিন-চার তলায় আরেকটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করছিল। প্রথম ঠিকাদার দ্বারা ভেতরে কাজ শেষ হলেও বাইরে কিছু কাজ বাকী আছে। ঠিকাদাররা টাকা না পেলে কাজ বন্ধ করে দেন। আমি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ফান্ড আসলে আগামী মাসে কাজ শুরু করা হবে।
প্রধান সম্পাদক প্রদীপ শীল - ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দীন।