যীশু সেন, বিশেষ প্রতিনিধি :
সংগীত মানব জীবনকে সমৃদ্ধ করে, আত্মবিশ্বাস ও শক্তি যোগায়। সুরের ভেলায় ভাসে মানবতা, সংগীতের মাধ্যমে জীবনের অর্থ খোঁজা। সংগীতের সুরে বাঙালির ইতিহাস বেঁচে থাকে এবং এটি সমাজে পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে। গান ও সুর জীবনকে আনন্দময় করে তোলে এবং মানবতার জয়গান গায়। সংগীতের মাধ্যমে মানুষের সাথে এক গভীর যোগাযোগ সৃষ্টি করে এবং আমাদের ভাবনা ও অনুভূতি প্রকাশিত হয়। সংগীতের শক্তি জাতির ঐক্যের অনুপ্রেরণা। বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের এই অনুষ্ঠান সংগীত, সংস্কৃতি, মানবতা ও দেশপ্রেমের ঐক্যের সেতু হিসেবে কাজ করেছে এবং একে অপরকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে সংগীতের ভূমিকা তুলে ধরেছে।বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি দুই দিনব্যাপী আলোচনা সভা, বার্ষিক পুরস্কার ও সনদ বিতরণ এবং মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠানের সমাপনী অনুষ্ঠান ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউট (টিআইসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে বক্তারা সংগীতের গুরুত্ব ও তার সামাজিক ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা। তিনি বলেন, “শিশুদের পড়াশোনার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলাম হিসেবে সংগীতের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এটি ভবিষ্যতে তাদের জীবনে সাফল্য আনতে সাহায্য করবে। সংগীতের মাধ্যমে দেশপ্রেম, সংস্কৃতি এবং মানবতা ও ঐক্যের বার্তা পৌঁছানো সম্ভব।”বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ইজাহারুল আহম্মেদ শিহাব, সহকারী কমিশনার সুব্রত হালদার, চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সুবীর কান্তি দাশ।বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের সভাপতি লায়ন কৈলাশ বিহারী সেনের সভাপতিত্বে, বাচিক শিল্পী গৌতম চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের অধ্যক্ষ রিষু তালুকদার এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাগীশ্বরী সংগীতালয়ের বর্ষপূর্তি উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক সাংবাদিক যীশু সেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক প্রকৌশলী রিমন সাহা, সদস্য সচিব প্রিয়তোষ নাথ, রূপক ভট্টাচার্য, শিক্ষক পলাশ দে, ব্যাংকার উৎপল চক্রবর্তী, ডা. সৌমিত্র দাশ, শিক্ষক সমীরণ সেন প্রমুখ।অনুষ্ঠানে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় সঙ্গীত বিভাগে উত্তীর্ণ সেরা শিক্ষার্থীদের সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। ২০২৪ সালের উত্তীর্ণ সেরা শিক্ষার্থীরা হলেন: প্রবেশিকা বর্ষে: প্রথম - ভবতোষ রুদ্র, দ্বিতীয় - প্রান্তি ঘোষ, তৃতীয় - প্রশস্তি ঘোষ। প্রথম বর্ষে: প্রথম - হিমেল গুহ, দ্বিতীয় - পূর্ণা বণিক, তৃতীয় - সৃজন চৌধুরী ও সৃজা চৌধুরী। দ্বিতীয় বর্ষে: প্রথম - প্রিয়ন্তি দাশ পূর্বা, দ্বিতীয় - পারমিতা চৌধুরী ও অপ্সরা সাহা, তৃতীয় - অনিন্দিতা চৌধুরী ও সৌমিক দাশ। তৃতীয় বর্ষে: প্রথম - সজীব চৌধুরী, দ্বিতীয় - চিন্ময় দে, তৃতীয় - অদ্রি সেন। চতুর্থ বর্ষে: প্রথম - অনিরুদ্ধ দাশ, দ্বিতীয় - স্নিগ্ধা দে, তৃতীয় - ঋষিক রায়। পঞ্চম বর্ষে: প্রথম - ডা. সৌমিত্র দাশ, দ্বিতীয় - সৌরভ সাহা, তৃতীয় - নীলাদ্রি দাশ। ষষ্ঠ বর্ষে: প্রথম - অর্পিতা দাশ।প্রায় ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে সঙ্গীতানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি রজনীকান্ত সেন, কবি অতুল প্রসাদ সেন ও কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়সহ ছয়টি গ্রুপে সমবেত সংগীত, একক ও দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করা হয়।অতিথিদের সম্মান প্রদর্শনের জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে যন্ত্র সহযোগিতায় ছিলেন: কী বোর্ডে নিখিলেশ বড়ুয়া, বাঁশিতে প্রাণেশ ভট্টাচার্য, অক্টোপ্যাডে অনুজিত বড়ুয়া লিমন, বেস গীটারে তন্ময় বড়ুয়া, তবলায় রূপক ভট্টাচার্য, পলাশ দে ও সৌমেন দাশ।এই বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে বাগীশ্বরী সংগীতালয় তার ২০ বছর পূর্তিতে সংগীতের শক্তি, সংস্কৃতি, মানবতা ও দেশপ্রেমের প্রচারের মধ্য দিয়ে সমাজে ঐক্য এবং সমৃদ্ধির বার্তা দিয়েছে।
প্রধান সম্পাদক প্রদীপ শীল - ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দীন।