বিট্রিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্র নায়ক মাস্টার দা সূর্যসেনের ১৩০তম জন্ম বার্ষিকীতে তার ভাষ্কর্য্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। গতকাল বুধবার (২২ মার্চ) রাউজান পৌরসদরের মুন্সিরঘাটায় সূর্য সেন পাঠাগারের সামনে স্থাপিত ভাষ্কর্য্যে তিনি প্রয়াত এই বিপ্লবীর জীবনীর উপর বক্তব্য রাখেন। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, পৌর মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট সমীর দাশ গুপ্ত, রাউজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, রাউজান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিম নেওয়াজ চৌধুরী,কাউন্সিলর কাজী ইকবাল, আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম বাহদুর, সুমন দে, আবদুল লতিফ, যুবলীগের তপন দে, আবু সালেক, ছাত্রলীগ নেতা অনুপ চক্রবর্তী প্রমুখ। উল্লেখ্য,মাস্টারদা সূর্য সেনের ১৮৯৪ সালের ২২মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ১৩ নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতর নাম রাজমনি সেন ও মাতার নাম শশী বালা। মাস্টার দা সূর্য সেন চট্টগ্রাম, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর জেলার বহরমপুর কলেজে অধ্যায়ন করেন। পরবর্তীতে ১৯১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি, এ পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হন। বহরমপুর কলেজে অধ্যয়ন কালে তাঁর শিক্ষক অধ্যাপক সতীশ চন্দ্র চক্রবর্তীর সংস্পর্শে গোপন বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে পরিচিত হন। শিক্ষা জীবন শেষে সূর্য সেন চট্টগ্রামের দেওয়ান বাজার এলাকার “উমাতারা” উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময় তিনি ‘মাষ্টার দা’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯১৯ সালে কানুনগোপাড়ার নগেন্দ্রনাথ দত্তের কন্যা পুষ্প কুন্ডলার সঙ্গে প্রণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। শিক্ষকতার পাশাপাশি সূর্যসেন অনুরূপ সেন, চারু বিকাশ দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, নগেন্দ্রনাথ সেনকে সঙ্গে নিয়ে গোপন বিপ্লবী দল গঠনের কাজ শুরু করেন। ১৯২০ সালে মহাত্মা গান্ধী কর্তৃক অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে গান্ধীজির অনুরোধে তিনিও অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। পরে তিনি এক সময় শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে দেন। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল সূর্যসেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা পাহাড়তলীর ফৌজি আস্ত্রাগার দখল করেন এবং চট্টগ্রামকে স্বাধীন ঘোষণা করেন। ২২ এপ্রিল জালালাবাদ পাহাড়ে সন্মুখ যুদ্ধে মাস্টার দা’র বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্বে ইংরেজ বাহিনীকে পরাভূত করেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা সূর্যসেনকে গ্রেফতারের জন্য দশহাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুন্ঠন, জালালাবাদে ইংরেজদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ, ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণে নেতৃত্ব দান করে বিপ্লবী খেতাব লাভ করেন। ১৯৩৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সূর্যসেন তার এক নিকট আত্মীয়ের বিশ্বাস ঘাতকতায় চট্টগ্রামের পটিয়ার গৈরালা গ্রামের ক্ষীরোদপ্রভা বিশ্বাস না¤œী এক মহিলার বাড়িতে অবস্থান কালে গুর্খা সৈন্যের হাতে ধরা পড়েন। ১৯৩৪ সালের ১২ই জানুয়ারি চট্টগ্রাম কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।
প্রধান সম্পাদক প্রদীপ শীল - ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দীন।