প্রতিবছর শীতের শুরুতে আমাদের দেশে নাম না জানা রংবেরঙের অনেক অতিথি পাখি বেড়াতে আসে। নদী,বিল, জলাশয় ও পুকুরে এসে ভরে যায় এসব পাখির কাকলিতে। তেমনি চট্টগ্রামের রাউজানে প্রতি বছরই একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই পাখিদের দেখা যায়।হালদা নদী,ঈসা খাঁ দিঘি,পরীর দিঘি,নরসরত বাদশা দিঘি, জলদ দিঘি,জল পাইন্ন্যা দিঘি, রায় মুকুট দিঘি,ভিক্ষু ভানুপুর দিঘিসহ রড় আকৃতির জলাশয় গুলোতে এসব পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে এসে জলখেলিতে আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করছেন।রাউজান পরিবেশ দুষণ প্রতিরোধ আন্দোলন কমিটির সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক মীর মোহাম্মদ আসলাম জানান শীত মৌসুমে আমাদের দেশে বিশ্বের শীত প্রধান দেশ সমূহ থেকে লাখ লাখ অতিথি পাখি বড় বড় জলাশয়ে এসে আশ্রয় নেয়।মনের সুখে পাখির দল কিচিরমিছির শব্দে পরিবেশকে জাগিয়ে তোলে।দুর দুরান্ত থেকে আসা এসব পাখির নিরাপত্তা দেয়া আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।যাতে পাখি গুলোর নিরাপদ পরিবেশে বিছরণ করতে পারে।একই সাথে যারা অতিথি পাখি শিকার করে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে।জানা যায় বরফ শুভ্র হিমালয় এবং হিমালয়ের ওপাশ থেকেই বেশির ভাগ অতিথি পাখির আগমন ঘটে।এসব পাখিরা হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তিব্বতের লাদাখ থেকে সেন্ট্রাল এশিয়ান ইন্ডিয়ান ফ্লাইওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে।এ ছাড়া ইউরোপ,দূরপ্রাচ্য সাইবেরিয়া থেকেও এসব পাখি আসে।এরা কিছু দিন থাকার পর আবার ফিরে যায় নিজ দেশে।আগত অতিথি পাখি গুলো অনেক সময় শিকারীর কাছে ধরা পড়ে।এটা ঘোরতর অপরাধ। এসব দুষ্কর্ম্মে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে,শীতকালে এদেশে আসা পাখিদের মধ্যে রয়েছে সোনাজঙ্গ,খুরুলে,কুনচুষী,বাতারণ,শাবাজ,জলপিপি,ল্যাঞ্জা,হরিয়াল,দুর্গা,টুনটুনি,রাজশকুন,লালবন মোরগ,তিলে ময়না,রামঘুঘু,জঙ্গী বটের,ধূসর বটের,হলদে খঞ্চনা,কুলাউ ইত্যাদি।এছাড়াও নানা রং আর কণ্ঠ বৈচিত্রের পাখিদের মধ্যে রয়েছে ধূসর ও গোলাপি রাজহাঁস,বালি হাঁস, লেঞ্জা, চিতি,সরালি, পাতিহাঁস,বুটিহাঁস,বৈকাল,নীলশীর পিয়াং,চীনা, পান্তামুখি,রাঙামুড়ি,কালোহাঁস,রাজহাঁস,পেড়িভুতি,চখাচখি, গিরিয়া,খঞ্জনা,পাতারি,জলপিপি,পানি মুরগি,নর্থ গিরিয়া, পাতিবাটান,কমনচিল,কটনচিল প্রভৃতি।জানা যায়,রাউজানে অতিথি পাখির নিরাপদ অভয়ারণ্যে সৃষ্টি করতে রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।সেকারণেই রাউজানকে নিরাপদ মনে করেন আগত অতিথি পাখিরা।সেজন্যে রাউজানের প্রতিটি জলাশয়,দিঘি, খাল,বিলে অতিথি পাখির বিচরণ দেখা যায়।নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন সরোয়ার্দী সিকদার জানান,প্রতি বছর শীত মৌসুমে আমার ইউনিয়নে অবস্থিত ঈসা খাঁ দিঘিতে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। আগত অতিথি পাখি গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নোয়াজিষপুর এলাকার সকল মানুষ আন্তরিক ভাবে দেখভাল করে।এই এলাকার মানুষ অতিথি পাখি দেখতে এই দিঘিতে আসে।পাখিদের সাথে ছবি ধারণ করেন।মনোমুগ্ধকর পরিবেশে আশ্রিত পাখিদের জলখেলি দেখতে পাখি প্রেমীরা দিঘিতে আসে।
প্রধান সম্পাদক প্রদীপ শীল - ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দীন।