প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত হালদা নদীতে মা-মাছের রেনু বেচা-কেনা হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। রেনুর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ক্রেতাদের থেকে। গত ১১ মে শনিবার থেকে হ্যাচারি ও মাটির কূয়া গুলোতে ফুটানো মাছের রেনু বিক্রি শুরু হয়েছে।সরোজমিনে দেখা যায়, হালদার রেনু কিনতে হ্যাচারিগুলোতে ভিড় করেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ক্রেতারা। এবার হালদার রেনু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি এক লাখ ৩০ হাজার থেকে এক লাখ ২০হাজার টাকায়। গত বছর ৮০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে রেনু। তবে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে রেনু এমন অভিযোগ জানিয়েছেন ক্রেতারা।উল্লেখ্য গত ৭ মে মঙ্গলবার মা মাছ প্রথম ধাপে ডিম ছাড়ে। ঐদিন ভোরে নদীতে ভাটার সময় হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করেন দুপুর পর্যন্ত। হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহের পরিমান প্রায় ১ হাজার ৬শত ৬০ কেজি। ডিম সংগ্রহ করার পর রাউজানের মোবারক খীল হ্যচারী, পশ্চিম বিনাজুরী আই,ডি,এফ এর হ্যচারী ও হাটহাজারীর মাছুয়াঘোনা হ্যাচারী, মাদারশা হ্যাচারী, মদুনাঘাট হ্যাচারীসহ মাটির কুয়ায় ডিম রেখে রেনু ফুটানো হয়। ডিম সংগ্রহকারী নুরুল ইসলাম বলেন, রাউজানের গহিরা মোবারক খীল হ্যাচারী থেকে প্রতি কেজি রেনু একলাখ ২০ হাজার টাকায় দরে বিক্রি হচ্ছে। এই হ্যাচারি থেকে ৪শত গ্রাম রেনু ডিম ৪৬ হাজার টাকা দিয়ে কিনেন মাছ চাষী রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর আলমগীর আলী। মোহাম্মদ আলী নামে একজন ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, হালদার রেনুর সাথে কুমিলার রেনু মিশ্রণ করে বিক্রি করার। তার মতে, যেই পরিমান রেনু হ্যাচারীতে দেখা যাচ্ছে প্রাপ্ত ডিম থেকে এত রেনু হওয়ার কথা না। আমি সেই সন্দেহে এখনও রেনু কেনার সিন্ধান্ত নিতে পাচ্ছিনা।
রাউজান উপজেলা সককারী মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, হালদা নদীতে থেকে প্রথম ধাপে রাউজান-হাটহাজারী অংশে ডিম সংগ্রহকারীরা এক হাজার ৬৬০ কেজি ডিম সংগ্রহ করেন। এক হাজার ৬৬০ কেজি ডিম থেকে রেনু হবে ৪২ কেজি। এখন রেনু বেচা-কেনা চলছে। তবে আগামী পুর্ণিমার জোঁ’তে আবারো প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাত হলে দ্বিতীয় ধাপে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত ১২মে মাছুয়াঘোনা হ্যাচারিতে এক লাখ ৫ হাজার টাকায় ৩.৫ কেজি, শাহ মাদারী হ্যাচারীতে ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকায় ৩ কেজি ও মদুনাঘাট হ্যাচারীতে ১ লক্ষ টাকায় ১ কেজি রেনু বিক্রি হয়েছে। তিনি আরো জানান, হালদার রেনু গুণগত মান ভালো হওয়ায় দেশব্যাপী হালদার রেনুর চাহিদা রয়েছে। চলতি মাসের অমাবস্যার জোঁ অথবা পূর্ণিমার জোঁ’তে (২০ মে- ২৫মে) হালদা নদীতে দ্বিতীয় ধাপে মেজর কার্পজাতীয় মা মাছের ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a Reply