রাউজানে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে হত্যার অভিযোগে রাউজান থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক শেখ জাবেদ মিয়া সহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন নুরুল আলম নুরুর স্ত্রী সুমি আক্তার। অন্যদিকে অপহরণ করে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে চট্টগ্রামের রাউজান থানার পুলিশ এক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে ধরে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি অভিযোগ এনে রাউজান থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, সাবেক উপ-পরিদর্শক শাফায়েত হোসেন, সাবেক উপ-পরিদর্শক টুটন মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ডা. জাহাঙ্গীর আলম নামে ভুক্তভোগী এক চিকিৎসক। ঘটনার প্রায় ৯ বছর পর মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল রাউজান নোয়াপাড়া পথেরহাট এলাকার চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলমকে সাদাপোশাকে অপহরণ করেছিল রাউজান থানার এসআই টোটন মজুমদার। এর আগে চিকিৎসকের কাছে টুটন মজুমদার ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। না হলে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেন। চিকিৎসকের অপরাধ ছিল তিনি বিএনপি করেন। সাদাপোশাকে চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গাড়িচালক রাসেলের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু পরে রাসেল আদালতে হলফনামা দিয়ে জানান, চিকিৎসক জাহাঙ্গীর নামের কাউকে তিনি চেনেন না। তাঁর কাছ থেকে কেউ টাকা নেয়নি। গত ২৯ আগস্ট আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মিথ্যা মামলা হওয়ার পর থেকে গত ১০ বছর তিনি নোয়াপাড়া চেম্বারে বসে রোগী দেখতে পারেননি। কেন, কার নির্দেশে পুলিশ ও অন্য আসামিরা তাঁকে মিথ্যা মামলা ফাঁসিয়েছেন, তদন্ত করে তাঁদের আইনের আওতায় আনার দাবি এই চিকিৎসকের। অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যের মধ্যে সবাইকে ফোন দেওয়া হলেও তিনজনের মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় অভিযুক্ত রাউজান থানার সাবেক উপপরিদর্শক টুটন মজুমদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘উনার (চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম) বিরুদ্ধে মামলা করেছিল রাউজানের একটি বেসরকারি হসপিটাল কর্তৃপক্ষ । ওই মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন তৎক্ষালীন রাউজান থানার উপ-পরিদর্শক সাফায়েত হোসেন। আমি তখন নোয়াপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলাম। আসামী ধরতে সহযোগিতা করেছিলাম। আমি মামলার বাদীও না, আইও না। ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন এই পুলিশ কর্মকর্তার।
Leave a Reply