সে ছিল পরিত্যক্ত ভিটে মাটির কেয়ারটেকার। মালিকের মালিকানাধীন ভিটেতে থাকতে দিয়েছিলেন স্ত্রী সন্তান নিয়ে। সেই সুযোগে জাল কাগজপত্র তৈরী করে ভিটে মাটির মালিক হয়ে এখন ভিটের দাবি ছাড়তে হুমকি দিয়ে আসছে ভুমি দস্যু আবুল হোসেন ও তার সন্তানরা। এমন ঘটনাটি ঘটেছে রাউজানের পশ্চিম নোয়াপাড়া গ্রামে। এই পরিস্থিতিতে পড়ে জায়গার মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা উরকিরচর ইউনিয়নের সাবেক প্রয়াত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ শফিকুল ইসলামের ছেলেরা আবুল হোসেন গং এর বিরুদ্ধে উপজেলা সহকারি কমিশনারের কাছে ভুয়া দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে ভিটে মাটি জবরদখলের অভিযোগ করলে দুই পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সহকারি কমিশনার ভুমি আবুল হোসেন কর্তৃক ভুয়া দলিল দাখিল করে নামজারি করা খতিয়ান বাতিল করে দেয়।এসব তথ্য প্রকাশ করেন চেয়ারম্যানের ছেলেগণ ও হিন্দু পাড়ার লোকজন এক সংবাদ সম্মেলন করে।সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের ছেলে ব্যবসায়ী শেখ জাহেদুল শেখ ইসলাম বলেছেন, ভুমি দস্যু আবুল হোসেন বহুবছর ধরে প্রয়াত চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলামের ইটভাটায় মাটি কাটার মাঝি হিসাবে কাজ করে আসছিল। ওই সময় থেকে চেয়ারম্যান তার উপর বিশ্বাস রেখে পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ কাজসহ নিজেদের জায়গাজমির কাগজপত্র হালনাগাদ করে রাখার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিল। হাতিয়ার বাসিন্দা বিশ্বাসঘাতক আবুল হোসেনকে পরিবার নিয়ে থাকতে দিয়েছিল চেয়ারম্যানের কিনে নেয়া পশ্চিম নোয়াপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় ৩.৮৮ একরের একটি পরিত্যাক্ত ভিটায়। চেয়ারম্যান মারা গেলেও তার ছেলেরা বাবার মত আবুল হোসেনকে বিশ্বাস করে আসছিলেন। এসবের মধ্যে তারা কয়েক বছর ধরে আবুল হোসেনের মাঝে সন্ত্রাসী ভাব দেখতে পান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে থাকে পশ্চিম নোয়াপাড়ার সনাতনধর্মাবলম্বিদের কাছ থেকে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে জায়গা সম্পত্তি ও শ্মশান দখল চেষ্টার। এমন অভিযোগ পেয়ে আবুল হোসেনকে চেয়ারম্যানের সন্তানরা তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ঘটনা জানতে চায়। ভুমি দস্যু আবুল হোসেন মনিবের জায়গার মালিক চেয়ারম্যানের সন্তানদের চোখে চোখ রেখে বলে পরিত্যক্ত ভিটে মাটির কাগজপত্রে বেশির ভাগ অংশের মালিক সে নিজে। হিন্দুদের জায়গা সে কিনে নিয়েছে বলে দাবি করে জানায় তার কাছে কবলা খতিয়ান সব রয়েছে।চেয়ারম্যানের ছেলে শেখ রাসেদুল ইসলাম ও শেখ নাহিদুল ইসলাম বলেছেন কেয়ারটেকারের মুখে এক কথা শুনে ও আচরণ দেখে হতবম্ব হয়ে পড়ি আমরা পরিবারের সকলেই। পরে বাবার রেখে যাওয়া ভিটেমাটির কাগজপত্র খুঁজে নিয়ে তারা স্মরণাপন্ন হয় এসি ল্যান্ড অফিসে। এসি ল্যান্ড এমন অভিযোগ পেয়ে নীতিমালা অনুসরণ করে কাগজপত্র পর্যালোচনা করতে গিয়ে আবুল হোসেন ও তার ছেলে মিলন প্রকাশ সাব্বির এর জাল জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। এসি ল্যান্ড ভুয়া কাগজ পত্রে সৃষ্ট সব খতিয়ান বাতিল করে। গত ২১ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে পাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে বিশ্বনাথ চৌধুরী ও সুনিল শীল অভিযোগ করেন আবুল হোসেন ভুয়া দলিল ও খতিয়ান সৃষ্টির পাশাপাশি সরকারের রেকর্ডে থাকা “ক” তফসিলের অর্পিত সম্পত্তি নিজের নামে জাল খতিয়ান সৃষ্টি করেছে। তারা সনাতনী জনগোষ্ঠির শ্মাশান ও নিরহ মানুষের জায়গা কিনে নিয়েছে দাবি করে দখল করছে সন্ত্রাসীদের নিয়ে।ইতিমধ্য কিছু কিছু জায়গা এই প্রতারক অন্যের কাছে বিক্রি করেছে, নিজের স্ত্রীর নামে হেবা করে দিয়েছে। পাড়ার লোকজন ভিটামাটি হারানোর ভয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে। জানা যায় আবুল হোসেন গং ্এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন চেয়ারম্যান চেয়ারমম্যান পরিবার। জমির মালিক চেয়ারম্যানের সন্তান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের অভিযোগ এখন ভুমি দস্যু আবুল হোসেন ও তার সন্তান মামলা তুলে নিতে তাদের হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। আবুল হোসেনের জালজালিয়াতির অভিযোগ স্বীকার করে চেয়ারম্যানের এক সন্তান শেখ রাসেদুল ইসলাম বলেছেন এই ভুমি দস্যুর বিরুদ্ধে তারা আইনে লড়াইয়ে আছেন।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ভুমি দ্স্যু আবুল হোসেন গং এর বিরুদ্ধে ভুয়া দলিল সৃষ্টি করে নিরহ মানুষের জায়গা জবরদখলের অভিযোগ করেন ওই পাড়ায় বসবাসকারী বাসিন্দা নছুমা খাতুন, আয়ুব খান ও মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন। জানা যায় এই প্রতারক একটি মামলায় আদালতে মুচলেকা দিয়ে জামিনে আছেন। অপর একটি মামলা সিআইডিতে তদন্তাধীন আছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি অংছিং মারমা বলেন ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যে দিয়ে সৃষ্ট আবুল হোসেন গং কয়েকটি খতিয়ান বাতিল করা হয়েছে।
Leave a Reply