রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাবা- মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা,বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান। শুক্রবার বাদে আছর রাউজানের গহিরা উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে সর্বশেষ নামাজে জানাজা শেষে মা-বাবার পাশে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। দাফনের আগে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এসময় রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ ও সহকারী কমিশনার ভূমি অংছিং মারমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন পালিত, মুক্তিযোদ্ধা হাসেম উপস্থিত ছিলেন। মরহুমের জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকে দূর-দূরান্তের মানুষ আসতে থাকেন গহিরা গ্রামের বাড়িতে। গহিরা স্কুল মাঠে ঢল নামে মানুষের মরহুম আব্দুল্লাহ আল নোমানকে শেষবিদায় জানাতে। নিজ গ্রামের বাড়ির নামাজে জানাজাসহ চারটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।তিনি ২৫ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ভোরে রাজধানী স্কয়ার হাসপাতালে ৮২বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।গ্রামের বাড়ির জানাজায় অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপি আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপি নেতা মীর হেলাল, মরহুমের পুত্র সায়েদ আল নোমান।উল্লেখ্য এই রাজনীতিবিদদের জন্ম রাউজান উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের দক্ষিণ সর্তা গ্রামে।তিনি ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মৎস্য মন্ত্রণালয় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয়বার ২০০১ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
আবদুল্লাহ আল নোমানের রাজনীতির শুরুটা ষাটের দশকে। হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি যোগ দেন ছাত্র ইউনিয়নে। মেননপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।ছাত্রজীবন শেষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন। গোপনে ভাসানীপন্থী ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত হন। ১৯৭০ সালে তাকে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমে তিনি ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে ১৯৮১ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত ছিলেন।
Leave a Reply