২০১৮ বিধিতে সরকারিকৃত ৩৩৫ টি কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত নন-ক্যাডার শিক্ষকদের সংগঠন নন-ক্যাডার কলেজ শিক্ষক সমিতি’র উদ্যোগে আয়োজিত ৭ম বর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে দুই পর্বে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) ও ঢাকাস্থ স্টার হোটেল অনুষ্ঠিত হয়। ১ম পর্বে সকল শিক্ষক সংগঠনকে একত্রিত করে একটি একক সংগঠনে রূপ দেয়া এবং একটি নির্বাচিত প্রতিনিধি তৈরির লক্ষে ডিসেম্বর-২০২৫ এ নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষনা করা হয়। ভোটার তালিকা তৈরি, কলেজ পর্যায়ে শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কুমিল্লা মানিকারচর সরকারি কলেজ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মো. মামুনুর রশিদকে সভাপতি এবং রাউজান সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. আতিক উল্লাহ চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে ৫৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি এবং খাগড়াছড়ি গুইমারা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিনকে প্রধান উপদেষ্টা করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়। ২য় পর্বে নন-ক্যাডার কলেজ শিক্ষক সমিতির ওয়েবসাইট www.ncctabd.org উদ্বোধন করা হয়। আলোচনা পর্বে শিক্ষক নেতারা বদলী, পদোন্নতি, পদসোপান, স্থায়ীকরণ, গ্রেড অবনমন ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ২০১৮ বিধিতে বিদ্যমান বৈষম্য এবং চলমান সংশোধনী কার্যক্রম নিয়ে কালক্ষেপনের বিষয়েও হতাশা ব্যক্ত করেন। শুরুতে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক শরণখোলা সরকারি কলেজ, বাগেরহাট এর প্রভাষক ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোঃ আল মামুন সরকারিকৃত কলেজগুলোর বর্তমান অবস্থার একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন-সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকরা চরম বৈষম্যের শিকার। সরকারি চাকরি আইনে যেখানে ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বদলীর সুযোগ রয়েছে সেখানে ১ম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তারা বদলী যোগ্য নয়! এটা চরম বৈষম্য। তিনি আরো জানান, সরকার ইতোমধ্যে বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিও ভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলীর উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন যা প্রশংসনীয়। সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকদের বদলীর বিষয়টি তাঁদের প্রাণের দাবী বলেও তিনি জানান। আরেক শিক্ষক নেতা কুঞ্জ বিহারী সরকারি কলেজের মাকসুদা আকতার বলেন, সরকারিকরণের ৭ বছর পূর্ণ হলেও এখনো কেউ কোন পদোন্নতি পায়নি এমন কি পদোন্নতির জন্য পদও সৃষ্টি হয়নি। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের অনাগ্রহ এবং ক্যাডার, নন-ক্যাডার বিরোধের কারণে সরকারিকৃত কলেজগুলোর এই দুরাবস্থা। সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জলঢাকা সরকারি কলেজ, নীলফামারির প্রভাষক মোঃ আব্দুল্লাহ-আল-মামুন তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকরা এখন আর ক্যাডার পদ চায়না। সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক (নন-ক্যাডার) পদ সৃষ্টির মাধ্যমে দ্রুত পদোন্নতির জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। উপস্থিত শিক্ষক নেতারা চলমান নানা বৈষম্য, হয়রানি, বিশৃঙ্খলার ঘটনা উল্লেখ করে অনতিবিলম্বে এসব সমস্যার আশু প্রতিকার চেয়ে জোরালো সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী হিসেবে বিধি মোতাবেক যত ধরণের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা আত্তীকৃত শিক্ষক-কর্মচারীরা যেন তা পায় সেবিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আলোচনায়, ব্যক্তি ও দলগতভাবে সংক্ষুব্ধ পক্ষের শতাধিক মামলার বিষয়টিও উঠে আসে। একজন শিক্ষক আক্ষেপ করে বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের পিডিএস তৈরি হয়নি! প্রতিদিন গড়ে ১/২ জন শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে যাচ্ছেন। সমাপনি বক্তব্যে সভাপতি মহোদয় সকলকে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহবান জানান।
Leave a Reply