হত্যার ৫১ দিন পর রাউজানে থেকে উদ্ধার করা অজ্ঞাতনামা নারীর লাশের পরিচয় উদঘাটন করেছে রাউজান থানা পুলিশ। একই সাথে ওই নারী খুনের সাথে জড়িত তিন খুনিকে আটক করেছে পুলিশ। ১১ জানুয়ারী মঙ্গলবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিক্তিতে পুলিশ প্রথমে ঢাকা থেকে আটক করে নুরুল ইসলাম প্রকাশ বাদশাকে। তার স্বীকারোক্তি মতে চট্টগ্রাম শহর থেকে আটক করে আকতার হোসেন ও মেহেরাজ প্রকাশ মিরাজকে। থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ নভেম্বর রাউজানের পূর্বগুজরা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া সেকসন-২ সড়কের সিকদারঘাটা এলাকার রাস্তার পাশ থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই নারীর নাম আমেনা বেগম প্রকাশ রাহি, প্রকাশ শারমিন (২২)। তিনি কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া পাড়ার নুর হোসেন এর কন্যা। পুলিশের ভাষ্যানুসারে ভিকটিম শারমিনের সাথে নিজ পাড়ার নুরুল ইসলাম প্রকাশ বাদশার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ে প্রলোভনে শাররীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তিনি গর্ভবর্তি হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় নুরুল ইসলাম বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিতে শারমিনকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করে। গর্ভপাত ঘটানোর পরও বিয়ে না করায় ভিকটিম ও তার পরিবার নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ করে গত ১৯ সালের ১১ নভেম্বর কক্সবাজার সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে। ওই মামলায় নুরুল ইসলাম গ্রেফতার হয়ে কারা ভোগ করেন। জেল থেকে জামিনে এসে নুরুল ইসলাম মামলা প্রত্যাহার শর্তে শারমিনকে বিয়ে করার ও বশে আনে তার পরিবারকে। কৌশলের আশ্রয় নিয়ে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করলেও ভিকটিম মামলা প্রত্যাহার না করায় নুরুল ইসলাম শারমিনকে হত্যার কৌশল নেয়। তারই আংশ হিসাবে গোপনে বিয়ের প্রলোভনে শারমিনকে গত ১১ নভেম্বর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম শহরে এনে লালদিঘির পাড়েস্থ একটি হোটেলে রাখে। এখানে তাকে রেখে নুরুল ইসলাম খুনের পরিকল্পনা করে। এ কাজে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করে তার আত্মীয় লালখান বাজারের বসবাসকারী ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার মৃত গোলাম হোসেন এর পুত্র আকতার হোসেন(৩৫) ও রাউজানের জিয়াবাজার এলাকায় বসবাসকারী নোয়াখালীর হাতিয়া বাজারের রাশেদ মিয়ার পুত্র টেক্সি চালক মেহেরাজ প্রকাশ মিরাজ (২৩) এর সাথে। তিনজনের পরিকল্পনা অনুসারে গত ১৮ নভেম্বর হোটেল থেকে শারমিনকে নিয়ে টেক্সিতে করে কাপ্তাই, রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন স্পটে বেড়াতে বের হয়। এভাবে ঘুরে বেড়ানোর ফাঁকে ১৯ নভেম্বর তারা শহরে ফিরে যাওয়ার আগে সুযোগ খুঁজে শারমিনকে হত্যা করে। হত্যার পর তারা কাপ্তাই রোড ধরে শহরের দিকে এগুনোকালে রাউজানের পাহাড়তলী এলাকায় নিরিবিলি জায়গা এসে তিনজন শারমিনকে প্রথমে গলা চেপে ধরে। পরে গলায় ওড়না পেচিঁয়ে হত্যা করে টেক্সী গাড়ির ভিতর। এর পরে গাড়িটি নোয়াপাড়া পথেরহাট থেকে উত্তরমুখি রাউজান-নোয়াপাড়া সেকশন -২ পথের প্রায় চার কিলোমিটার ভিতরে গিয়ে নিরিবিলি স্থানে লাশটি ফেলে চলে যায়।
Leave a Reply