চট্টগ্রামের মহান দানবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কিংবদন্তী মহাপুরুষ মরহুম ছৈয়দ আব্দুল অদুদ চৌধুরী।তিনি ১৯০৭ সালে ৮ই মার্চ নোয়াজিষপুর গ্রামের ওয়ালী চৌধুরী বাড়ি প্রকাশ ওয়ালী বলি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতার নাম হাজী ছৈয়দ আহাম্মদ চৌধুরী, মাতা ওমদা খাতুন।এলাকার সূত্রে জানা যায়,আব্দুল অদুদ চৌধুরীর কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনি বেশ কিছু ভাষা জানতে এবং বুঝতেন। এরমধ্যে উর্দু, হিন্দি, গুজরাটি, মারাঠি, ইংরেজি ভাষা তিনি জানতে। কোন প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ না করলেও শিক্ষার প্রতি উনার একটা আকর্ষণ ও ভালবাসা ছিল।তাই আব্দুল অদুদ চৌধুরী এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াতে বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন।পাশাপাশি রাস্তাঘাট নির্মাণ করেন। ঊনিশ শতকের দিকে রাউজান উপজলার নোয়াজিষপুর গ্রাম ছিল বাংলাদেশের অন্যান্য গ্রামের মতো একটি অজপাড়া গাঁ। যাতায়াতের জন্য ছিল না কোন রাস্তা এবং ছিল না কোন উচ্চবিদ্যালয়।১৯০০ সাল থেকে ১৯৪৭ সালের সময়টা ইতিহাসে ছিল। ছিল না তেমন একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাই এলাকার শিক্ষা আলো ছড়াতে আব্দুল অদুদ চৌধুরী ফতেনগর নোয়াজিষপুর অদুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়,ফতেনগর নোয়াজিষপুর অদুদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, ফতেনগর অদুদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,হাটহাজারী অদুদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা,চন্দ্রঘোনা অদুদিয়া তৈয়্যবীয়া ফাজিল মাদ্রাসা, কাপ্তাই ফোরকানিয়া মাদ্রাসা,হাটহাজারীর মেখলে মসজিদ, চাক্তাই ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।এছাড়াও গহিরা- ফটিকছড়ি অদুদিয়া সড়ক নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাউজান সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যথেষ্ট অনুদান দিয়েছেন তিনি।তৎকালীন সময় তিনি বড় ব্যবসায়ী ও দানবীর ছিলেন। নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হুদা জানান, তৎকালীন সময় চিকদাইর-নোয়াজিষপুর মিলে একটি ইউনিয়ন ছিল।অদুদ চৌধুরী এই ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।তখনকার সময় চিকদাইর ও নোয়াজিষপুর এলাকায় প্রাইমারী স্কুল ছিল হাতেগোনা কয়েকটি। চিকদাইরে ছিল ১৯০০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভৈরব সওদাগরের মধ্য সর্তা রাম সেবক প্রাইমারী স্কুল।নোয়াজিষপুরের প্রথম স্কুল ছিল ফতেনগর নতুনহাট ফ্রি প্রাইমারী স্কুল। ছিল না কোন উচ্চ বিদ্যালয়। এলাকার যুবসমাজকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে অদুদ চৌধুরী ১৯৬৫ সালে একটি উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁরা বাড়ির সামনে প্রথমে ফতেনগর প্রাইমারী স্কুলের ভবন নির্মাণ করে ফতেনগর নোয়াজিষপুর অদুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনি মানুষের হৃদয়ে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।যুগ যুগ ধরে মানুষ অদুদ চৌধুরীর স্মৃতি ধরে রাখবে।এই স্কুলের প্রাক্তনছাত্র দিদারুল আলম জানান, মহান দানবীর অদুদ চৌধুরীর হাতে গড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বহু শিক্ষার্থী দেশ-বিশেসহ বিভিন্ন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে দেশের উন্নয়নে ভূমি রাখছেন। আমিও এই স্কুলের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। এই মহান দানবীর এলাকায় শিক্ষাক্ষেত্রে যে অবদান রেখেছেন তা, যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন মানুষের কাছে। আগামী ২৪ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মহান দানবীরের ৫৩তম মৃত্যু বার্ষিকীতে মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট মাগফেরাত কামনা করছি।৫৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সেলিম উদ্দিন জানান, মহান দানবীর মরহুম আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুল অদুদ চৌধুরীর ৫৩-তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে মিলাদ ও মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে।এই আয়োজন শতভাগ সফল করার জন্য আপনাদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।অদুদ চৌধুরী বেঁচে থাকুক অনন্তকাল নোয়াজিষপুরবাসীর অন্তরে।আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মকামে অধিষ্ঠিত করুন আমিন।
Leave a Reply