
নেজাম উদ্দিন রানা,
বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ খ্যাত এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে
মৃত আইড় মাছ উদ্ধার হয়েছে। এটির ওজন ১ কেজি ৯০০ গ্রাম। প্রাথমিক তদন্তে মৃত আইড় মাছের শরীরে আঘাতজনিত কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন রাউজান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার তোফাজ্জল হোসেন ফাহিম। ২২ অক্টোবর বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হালদা নদীর রাউজান উপজেলার আজিমেরঘাট এলাকা থেকে মৃত মাছটি উদ্ধার করেন বালি শ্রমিকরা।
স্থানীয় রোসাঙ্গীর আলম জানান, বালির নৌকায় থাকা শ্রমিকরা বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আজিমেরঘাট এলাকায় জোয়ারের পানিতে ভাসন্ত অবস্থায় মৃত আইড় মাছটি দেখতে পান। পরে সেটি উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আনার পর রাউজান ও হাটহাজারী মৎস্য অফিসারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। বিকেলে মৎস্য অফিসের লোকজন এসে সেটি নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে প্রেরণ করা হয়।রোসাঙ্গীর আলম জানান, মাছটি বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। গত কিছুদিন পূর্বে হালদা নদীর শাখাখাল মগদাই খালে পানিতে বিষ মারার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আলোচিত হয়। সেই সময় খালের মগদাই স্লুইস গেইটের ভেতরের অংশে কয়েকশ মিটার এলাকায় চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ ভেসে উঠার পর মাছগুলো ধরে বিক্রি করে দেয় কিছু অসাধুচক্র।গত মঙ্গলবার রাতে খালে বিষ দেওয়ার সময় হাতেনাতে কয়েকজনকে শনাক্ত করেন হালদা পাহারায় নিয়োজিত পাহারাদার মোঃ শাহ আলম। পরে বিষয়টি জেলা-উপজেলা মৎস্য অফিসকে অবহিত করা হয়। এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিচ্ছে উপজেলা মৎস্য অফিস।
স্থানীয় সচেতন মহলে হালদা নদীর শাখাখালে বিষ মারার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে। স্থানীয়দের মতে, বিষ মারার বিষয়টা খুবই জগন্য একটি কাজ। কারণ জোয়ার-ভাটায় খালের পানি নদীতে গিয়ে মিশে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। যার প্রভাবে নদীতে মৃত মাছ ভেসে উঠেছে।রোসাঙ্গীর আলম জানান, নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি ডলফিন দেখতে পান স্থানীরা। তবে জোয়ারের পানিতে ডলফিনটি ভেসে অন্যত্র ছুটে যাওয়ায় সেটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। রাউজান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার তোফাজ্জল হোসেন ফাহিম বলেন,হালদা নদী থেকে এক কেজি নয়শ গ্রাম ওজনের মৃত আইড় মাছ উদ্ধার করার পর ময়না তদন্তের জন্য হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তে আইড় মাছের শরীরে আঘাতজনিত চিহ্ন দেখা যায়নি। ধারণা করা হয়ে অক্সিজেন সংকটে শ্বাস বন্ধ হয়ে মাছটি মারা গেছে। নদীর শাখাখালে বিষ মারার একটা অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সেটার বিষয়ে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছি। তিনি আরো জানান, নদীতে ডলফিন সদৃশ একটা কিছু স্থানীয়রা দেখেছে এমন সংবাদ পাওয়ার পর আমরা স্থানীয় পাহারাদারদের নির্দেশনা দিয়েছি যাতে কোথাও ডলফিন ভাসতে দেখলে তাৎক্ষণিক যাতে মৎস্য অফিসে অবহিত করেন।
Leave a Reply