চট্টগ্রামের রাউজানে কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয় (১৯) অপহরণের পর জবাই করে মাথা আলাদা করা হয়। একই সাথে হাত ও পা আলাদা ভাবে টুকরা করা হয়। তারপর শরীর থেকে মাংস আলাদা করে কলাপাতা দিয়ে ডেকে পাহাড়ের উপর লুকিয়ে রাখা হয়। নৃশংস এই হত্যাকা-ে অংশ নিয়েছিল ১০ উপজাতীয় সন্ত্রাসী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল হৃদয়ের শরীরের মাংস রান্না করে খেয়েছিল উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। তবে মাংস রান্না করে খাওয়া কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। হৃদয়কে জবাইকারীসহ আরো দু’জনকে আটকের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৭।আটককৃতরা হলেন উচিংথোয়াই মারমা (২৩) ও তার সহযোগী ক্যাসাই অং মারমা (৩৬)। এদের মধ্যে উচিংথোয়াই মারমা কলেজছাত্র শিবলীকে জবাই করেছে বলে জানায় র্যাব। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন নতুন ব্রিজ সংলগ্ন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।১ অক্টোবর রবিবার র্যাব-৭ চান্দঁগাও ক্যাম্পে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, রাউজানে কলেজছাত্র হৃদয় খুনের ঘটনায় জড়িত একজনের বাড়ী রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ায় এলাকায় ও অপরজনের বাড়ী বান্দরবানের রুমায়। এই দুজনের মধ্যে উচিংথোয়াই মারমা কলেজছাত্র শিবলীকে জবাই করে হত্যা করে বলে স্বীকার করেছে। র্যাব-৭ গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আটক দুই আসামীকে রাউজান থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন।রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার অজয় দেব শীল বলেন, বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে র্যাব হৃদয় হত্যাকা-ে সরাসরি জড়িত আরো দুইজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় মোট ৮জন আসামীকে র্যাব ও পুলিশ পৃথক ভাবে গ্রেফতার করে। জড়িত আরো দুই আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, আটককৃত খুনিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে হৃদয় অপহরণে অংশ নেয় ৫জন উপজাতীয় সন্ত্রাসী ও হত্যাকা-ে অংশ নিয়েছিল ৫জন উপজাতীয় সন্ত্রাসী। তৎমধ্যে অপহরণকারী ৫জন হৃদয়ের সাথে মুরগীর খামারে চাকরী করতো।উল্লেখ, ভুক্তভোগী শিবলী সাদিক হৃদয় রাউজানের কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি বাড়ির পাশে অবস্থিত একটি মুরগির খামারের ম্যানেজার হিসাবে কাজ করতেন। সেই খামারে কাজ করা কয়েকজনের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ২৮ আগস্ট শিবলী সাদিককে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনার দু’দিন পর অপহরণকারীরা হৃদয়ের পরিবারের কাছে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলে তার বাবা মো. শফি ২ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। কয়েকদিন পর বান্দরবান এলাকায় ডুলাপাড়ায় গিয়ে দুই লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু তারা হৃদয়কে মুক্তি দেয়নি। এরপর ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। অপরণকারীদের এক প্রেমিকার দেয়া তথ্য মতে হৃদয় অপহরন ও হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে জড়িত ৬জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৬জনের মধ্যে অপহরণের মূলহোতা উমুসিং মারমাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে উত্তেজিত জনতা পিটিয়ে হত্যা করে।
Leave a Reply